সাধারণত সবজি হিসেবে ভাবা হলেও শসা আসলে একটি ফল। এটি উপকারী পুষ্টিতে উচ্চ গুণমান থাকায় এটিকে ফলের আসনে গুরুত্ব দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট উদ্ভিদ যৌগ থাকায় ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের কারণে চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ বিষয়ে শসাকে আদর্শ হিসেবে গণ্য করা হয়। শসাতে ক্যালরি কম থাকে এবং এতে প্রচুর পরিমাণে পানি ও দ্রবণীয় ফাইবার থাকে; যা দেহকে হাইড্রেডেট রাখে, ফলে পানিশূন্যতা থেকে মুক্তি দেয়।

কাঁচা শসাতে যা আছে
শসায় ক্যালরি কম, কিন্তু পানি বেশি থাকে। এ ছাড়া বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। ক্যালরি ৪৫, মোট চর্বি ০ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ১১ গ্রাম, প্রোটিন ২ গ্রাম, ফাইবার ২ গ্রাম, ভিটামিন সি ১৪ শতাংশ, আরডিআই, ভিটামিন কে ৬২ শতাংশ ম্যাগনেশিয়াম ১০ শতাংশ, পটাশিয়াম ১৩ শতাংশ, ম্যাঙ্গানিজ ১২ শতাংশ এবং প্রায় ৯৬ শতাংশ পানি।

শরীরে পানিশূন্যতা কমায়
পানি আপনার শরীরকে কার্যকর রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বর্জ্য ও পুষ্টি পরিবহনের মতো প্রক্রিয়াগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকে। শরীরে পানির সঠিক মাত্রা শারীরিক কর্মক্ষমতা থেকে বিপাক পর্যন্ত সবকিছুকে প্রভাবিত করতে পারে। আপনি পানি বা অন্যান্য তরল যেমন জুস বা চা দ্বারা আপনার তরল চাহিদার পূরণ করেন তখন আপনি পানি বহনের জন্য কতটুকু পানি পান করবেন, তার একটি মাত্রা থাকে। কিছু মানুষ তাদের মোট পানি গ্রহণের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বিভিন্ন খাবার থেকে পেতে পারে। যেহেতু শসা প্রায় ৯৬ শতাংশ পানি দ্বারা গঠিত, তাই শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে বিশেষভাবে কার্যকর এবং প্রাত্যহিক চাহিদা অনুযায়ী পানি পান না করেও দিনে একটি বা দুটি শসা খেয়ে প্রতিদিনের তরল চাহিদা মেটানো সম্ভব।
ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে
শসা ওজন কমাতে সাহায্য করে। প্রথমত, শসার ক্যালরি কম। এর মানে হলো যে আপনি অতিরিক্ত ক্যালরির নিয়ে না ভেবে প্রচুর পরিমাণে শসা খেতে পারেন। সালাদ, স্যান্ডউইচ ছাড়াও সাইড ডিশগুলোতে তো শসা রাখা যেতে পারে।

রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতে পারে
গবেষণায় দেখা গেছে, শসা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং ডায়াবেটিসের কিছু জটিলতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে। রক্তে শর্করার ওপর বিভিন্ন উদ্ভিদের প্রভাব থাকে। শসা কার্যকরভাবে রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। শসার খোসা বেশির ভাগ ডায়াবেটিস-সম্পর্কিত পরিবর্তনগুলোকে উল্টে দেয় এবং রক্তে শর্করার হ্রাস ঘটায়। গবেষণায় দেখা গেছে, শসা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে এবং ডায়াবেটিসের জটিলতা প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে।

ফ্রি র্যাডিক্যাল রোধ করে
অ্যান্টি–অক্সিডেন্টগুলো হলো অণু, যা অক্সিডেশনকে অবরুদ্ধ করে। এটি একটি রাসায়নিক বিক্রিয়া, যা ফ্রি র্যাডিক্যাল নামে পরিচিত, অবিকৃত ইলেকট্রনগুলোর সঙ্গে অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল পরমাণু গঠন করে। এই ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যালগুলো জমা হওয়ার ফলে বিভিন্ন ধরনের দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে ফ্রি র্যাডিক্যাল দ্বারা সৃষ্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ক্যানসার এবং হার্ট, ফুসফুস এবং অটোইমিউন রোগের সঙ্গে যুক্ত। শসাতে ফ্ল্যাভোনয়েড, ট্যানিনসহ অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যাল জমা হতে বাধা দেয় এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে।

কখন কীভাবে খাবেন
লেখক: খাদ্য ও পথ্যবিশেষজ্ঞ; প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র
আলমগীর আলম
ন্যাচারোপ্যাথি ও আকুপ্রেসার বিশেষজ্ঞ
আমি আলমগীর আলম, আকুপ্রেসার ও ন্যাচারোপ্যাথি নিয়ে কাজ করি, আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় এটা প্রমাণিত যে, আমরা বর্তমান সময়ে যে খাদ্যভাস, জীবনাচার নিয়ে আছি তাতে সুস্থ থাকা অসম্ভব। আমাদের প্রচলিত চিকিৎসা ব্য...
View author profileRelated Posts
পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা PCOS
Aug 12, 2025
Antibiotic নিয়ে সর্তক থাকুন
Aug 12, 2025
আমজনতার আম – আম খাওয়ার উপকারিতা
Aug 12, 2025